Sunday, April 29, 2012

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তুলবেন কিভাবে? আসুন জেনে নেই


 বিভিন্ন প্রয়োজনেই আমাদের 'পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট'- এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই সার্টিফিকেট তোলাটা কোন কঠিন কিছু না। নিম্ন বর্ণিত ধাপগুলো অনুসরণ করুন: (২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ তারিখে আমি নিজের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তুলতে গিয়ে বেশ কিছু নতুন তথ্য জানতে পেরে এ সংক্রান্ত এই পোস্টের পূর্বের তথ্যসমূহ আপডেট করলাম)

১. পাঁচশত (৫০০/=) টাকার ট্রেজারী চালান:
প্রথমেই 'সোনালী ব্যাংক' থেকে পাঁচশত (৫০০/=) টাকার ট্রেজারী চালান কাটুন। আপনার বাড়ির নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকে গিয়ে (যেখানে ট্রেজারী চালান জমা নেয়া হয়) 'ক্যাশ গ্রহণ' কাউন্টার থেকে একটি ট্রেজারী চালান ফরম (মূলকপি) নিন। এরপর চালানের এই মূল কপিটি নিচের
ছবি অনুসরণ করে সঠিকভাবে পূরণ করুন:
ট্রেজারী চালান পূরণের নিয়ম

এরপর উক্ত মূল কপিটির আরও ২ টি ফটোকপি করুন। এবার চালানের ৩টি কপি ৫০০ টাকা সহ সোনালী ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিন। জমা দেবার পূর্বে ৩ টি চালানের (একটি মূল কপি এবং ২ টি ফটোকপি) ফটোকপিকৃত একটি চালানের পিছনে আপনার মোবাইল নম্বরটি লিখুন। এরপর স্বাক্ষর-সিল দিয়ে ২টি ফটোকপি ব্যাংক রাখবে এবং মূলকপিটি আপনাকে দিয়ে দেবে। সোনালী ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত এই মূলকপিটির একটি ফটোকপি আপনার নিজের সংগ্রহের জন্যে রেখে দিন।

২. পাসপোর্টের ফটোকপি:
আপনার পাসপোর্টের প্রথম সাত পাতা ফটোকপি করুন। আর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হলে শুধু প্রথম দুই পাতা ফটোকপি করলেই চলবে।

৩. হাতে লিখিত আবেদনপত্র:
সাদা কাগজে হাতে লিখিত আবেদন পত্র লিখুন। (নিচে এর নমুনা দেয়া হলো)

৪. জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি

কোথায় জমা দিবেন:
উপরিউক্ত পাঁচশত (৫০০/=) টাকার ট্রেজারী চালান-এর একটি কপি, পাসপোর্টের ফটোকপি, জাতীয়পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং হাতে লিখিত আবেদনপত্র নিয়ে ঢাকাস্থ মিন্টো রোড পুলিশ হেডকোয়ার্টারে চলে যান। সাথে করে পাসপোর্টের মূল কপিটি নিতে ভুলবেন না।
জমা দেবার পর আপনাকে একটি রিসিট দেওয়া হবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে। সেটি সযত্নে রেখে দিন। সেখানেই ডেলিভারির তারিখটি উল্লেখ করা থাকবে।
কাগজপত্র জমা দেবার ১/২ দিনের মধ্যেই আপনার স্থায়ী ঠিকানায় স্থানীয় থানার পুলিশ যাবে। যিনি যাবেন, তাকে আপনার মূল পাসপোর্টটি দেখান এবং এর সাথে ২০০/৩০০ টাকা 'চা-বিড়ি' খাবার জন্যে অবশ্যই দিন। (একটা ১০০ টাকার নোট দিয়েও দেখতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে 'তিনি' কিঞ্চিত মাইণ্ড করতে পারেন)

জমা দেবার দিন থেকে ৭-১০ দিনের মধ্যে আপনি আপনার কাঙ্খিত 'পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট'টি হাতে পাবেন (যদি আপনার নামে কোন মামলা না থাকে)। আপনাকে প্রদেয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের মেয়াদোত্তীর্ণের নির্দিষ্ট কোন তারিখ দেয়া থাকবেনা। সুতরাং যে উদ্দেশ্যে (ইমিগ্রেশন অথবা বিদেশ ভ্রমণ) সার্টিফিকেটটি তুলবেন, খুব দ্রুত সেটি যথাস্থানে প্রদান করুন।

পুলিশ কিয়ারেন্স সার্টিফিকেট-এর জন্য নমুনা আবেদনপত্র:

তারিখ: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১২

বরাবর
পুলিশ কমিশনার,
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ,
পুলিশ হেডকোয়ার্টার,
রমনা, ঢাকা।

বিষয়: পুলিশ কিয়ারেন্স সার্টিফিকেট-এর জন্য আবেদনপত্র।

মহোদয়,

আমি নিম্ন সাক্ষরকারী (নাম: মোছা: পেয়ারা বেগম, পিতা: আপেল মাহমুদ, স্থায়ী ঠিকানা: ১ নং বেচারাম দেউড়ী, লালবাগ, থানা: লালবাগ, ঢাকা-১২১১, বর্তমান ঠিকানা: ১৪, দক্ষিণ কমলার বাগান, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬, পোষ্ট অফিস+থানা: মিরপুর-২) বাংলাদেশের একজন স্থায়ী নাগরিক। আমার পাসপোর্ট নম্বর: E1222225 এবং পাসপোর্টটি আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস, ঢাকা থেকে ১/১২/২০১০ তারিখে ইস্যুকৃত। বর্তমানে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমার একটি পুলিশ কিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন।

অতএব, মহোদয়ের নিকট নিবেদন এই যে, একটি পুলিশ কিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ইস্যু করে বাধিত করবেন।

ধন্যবাদান্তে,

(পাসপোর্টের সাক্ষর)
মোছা: পেয়ারা বেগম,
১৪, দক্ষিণ কমলার বাগান, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬,
পোষ্ট অফিস+থানা: মিরপুর-২,
পাসপোর্ট নম্বর: E1222225,
মোবাইল নম্বর: ০১৭১২৩৬৩৬৩৯।

সংযুক্তি:
১. পাসপোর্টের প্রথম সাত (৭) পাতার অনুলিপি (মেশিন রিডেবল হলে প্রথম দুইপাতা)
২. পাঁচশত (৫০০/=) টাকার ট্রেজারী চালান
৩. জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি

না বলা কথা:
১. মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের অনুলিপিতে কাগজের সাদা অংশে আপনার পিতার নাম এবং বাসার ঠিকানা পরিষ্কারভাবে ইংরেজি বড় হাতের অক্ষরে লিখে দিন।
২. সম্প্রতি জানতে পারলাম, কানাডার ইমিগ্রেশনের জন্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের ভ্যালিডিটি ১ বছর পর্যন্ত।
৩. স্পেনের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্যে আবেদনপত্র সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
৪. ঢাকায় সর্বনিম্ন ৮ হাজার টাকা (ঘুষ প্রদান সাপেক্ষে) ২ দিনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে ডি.এম.পি তে যথাযথ চ্যানেল ধরার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
৫. ডি.এম.পি তে প্রথমদিন চালানের কাগজসহ আবেদন জমা দেবার পর যে টোকেনটা তারা দিবে, সেটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স উত্তোলনের দিন নিজে না গিয়ে আপনার পরিচিত অন্য কোন ব্যক্তিকে দিলে তিনিও আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তুলতে পারবেন।
৬. মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে যেহেতু পিতার নাম এবং বাসার ঠিকানা থাকেনা, তাই জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদের অনুলিপি জমা দেবার সময় খেয়াল রাখুন যেন হাতে লিখিত মূল আবেদনপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদে আপনার নিজের নাম, বাসার ঠিকানা এবং পিতার নামের বানানে কোন প্রকার ভুল না থাকে।


Thing you for shairing it.

Technorati Digg This Stumble Stumble Facebook Twitter

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Hosted Desktop